ফ্রান্সে শ্রমিক বিদ্রোহ

চল্লিশ বছরের বেশী সময়ের মধ্যে ফ্রান্সে সর্ববৃহৎ শ্রমিক বিদ্রোহ দেখা গিয়েছে সম্প্রতি। সারকোজির সরকার ঘোষিত একটি নীতি, যাতে অবসর নেবার বয়সসীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছর করা হয়েছে, সেটা বাতিল করার জন্যই দেশের শ্রমিক ইউনিয়নগুলোসহ বহুবিধ রাজনৈতিক শক্তি এই বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের ডাক দেয়। গত অক্টোবরে এই ধর্মঘট ক্রমে ক্রমে শক্তি অর্জন করে। এক পর্যায়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ লক্ষ শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন। তাদের সাথে সামিল হয় ছাত্র ও তরুণরা, যা শাসকদেরকে ষাটের দশকের মে-অভ্যূত্থানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। শ্রমিক ধর্মঘটের ফলে তেল শোধনাগার ও তেলের পাম্পগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পরিবহন সেক্টরসহ বিমান উড্ডয়নও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত এই ‘সভ্য’ উন্নত দেশের সরকার আমাদের দেশের বর্বর সরকারগুলোর মতই পুলিশ দিয়ে কিছু সংখ্যক তেল পাম্প খোলার ব্যবস্থা করেছে। বুর্জোয়া সংসদে সংশ্লিষ্ট আইনটিকে পাশ করেছে। কিন্তু ধর্মঘট সারা অক্টোবর ধরেই চলেছে। এর শেষ কীভাবে ঘটবে এখনো নিশ্চিত নয়। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দার একটি প্রকৃষ্ট প্রতিক্রিয়া হলো ফ্রান্সের এই শ্রমিক আন্দোলন। সারা বিশ্বের মত ফ্রান্সেও এখন বিপ্লবী রাজনীতির অভাব/দুর্বলতা রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শ্রমিক শ্রেণী নিজ শ্রেণী সংগ্রাম তীব্র করে তুলেছেন, আমাদের দেশের মতই, যা ভবিষ্যত শ্রমিক বিপ্লবের বার্তাকেই ঘোষণা করছে।

About andolonpotrika

আন্দোলন বুলেটিনটি হলো বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের একটি অনিয়মিত মুখপত্র
This entry was posted in আন্দোলন ৭. Bookmark the permalink.

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s