আফগানিস্তানে বাংলাদেশী সৈন্য

মার্কিনের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদীরা যখন আফগানিস্তানের চরম প্রতিক্রিয়াশীল অন্যায় আগ্রাসী যুদ্ধে নিজেরা হাবুডুবু খাচ্ছে, তখন সেখানে বাংলাদেশকে সরাসরি জড়িয়ে ফেলার লক্ষ্য থেকে বাংলাদেশী সৈন্য মোতায়েনের প্রস্তাব করেছে আমেরিকা। যুদ্ধের এই ধরনের এক রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও সামরিক পরাজয়ের মুখে মার্কিনীদের এই প্রস্তাব পেশটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও বর্তমান সরকার কতটা নতজানু ও নিকৃষ্ট দালালী চরিত্র ধারণ করেছে। স্বাধীনতার গলাবাজীওয়ালা হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান না করে বরং বিবেচনায় নেবার কথা বলে তাকে নীতিগতভাবে কার্যত গ্রহণ করে নেয়। কিন্তু জনমত ও বিশ্ব পরিস্থিতির চাপে তা প্রকাশ্যে গোপন রাখে। পরে ‘বিবেচনা’র পর সরকার ঘোষণা করে যে, এ মূহুর্তে তারা য্দ্ধু করার জন্য সৈন্য পাঠাবে না, তবে সেখানকার জাতীয় বেইমান মার্কিনী দালাল বাহিনীর রাজাকারদেরকে প্রশিক্ষণ দেবে এবং অন্যান্য সহযোগিতা করবে। এভাবে হাসিনা সরকার এ মূহুর্তে পৃথিবীর ঘৃণ্যতম আগ্রাসনের সাথে বাংলাদেশকে সামরিকভাবে জড়িয়ে ফেলে এক চরম জাতীয় বিশ্বাসঘাতক সাম্রাজ্যবাদী দালালী ভূমিকা গ্রহণ করেছে। নিজেরা সাম্রাজ্যবাদের রাজাকারে পরিণত হয়েছে। এর আগেই তালেবানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে হুমকি দিয়ে বলা হয় যে, সৈন্য পাঠালে বাংলাদেশ তালেবানদের আক্রমণের মুখে পড়বে। দেশের ব্যাপক প্রগতিশীল ও সাধারণ জনগণ সৈন্য পাঠানোর বিরোধিতা করেন। এসবের মুখে আওয়ামী সরকার একটু ঘুরিয়ে মার্কিনের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে। আফগানিস্তানে মার্কিন একটি অন্যায় আগ্রাসী যুদ্ধ চালাচ্ছে তাই নয়, সেখানে তারা পরাজিতও হচ্ছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী অনেক দেশ সেখানকার যুদ্ধে কোন ভাল ভবিষ্যত দেখতে না পেয়ে নিজেদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে বা তার ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থায় মার্কিন সেখানে অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়েছে। কিন্তু মার্কিন ও তার মিত্র ভারত সেই যুদ্ধটি চালিয়ে যেতে চায়। মুসলিম দিয়ে মুসলিম মারো এ ধরণের একটি হীন সাম্প্রদায়িক চক্রান্তও এখানে মার্কিন-ভারত অক্ষের পক্ষ থেকে ক্রিয়াশীল রয়েছে। সাম্রাজ্যবাদের দালালী করলেও বিশ্বের বহু মুসলিম অধ্যূষিত দেশ মার্কিনের অনুরূপ প্রস্তাব ইতিমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ অবস্থায় মার্কিন বাংলাদেশের দিকে নজর দিয়েছে, যখন কিনা তাদের অনুকম্পায় এখন আওয়ামী সরকার ক্ষমতাসীন। ফলস্বরূপ তারা গ্যাস, বিদ্যুৎ, কয়লা, তেল, বন্দর, ট্রানজিট, পানি-সম্পদ ইত্যাদি বহুবিধ প্রশ্নে মার্কিন-ভারতের স্বার্থানুসারী চুক্তিগুলো সম্পন্ন করেছে ও করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এখন তারা সবচেয়ে নাজুক সামরিক প্রশ্নটিতে হাত রেখেছে। এর পরিণতি হবে খুবই মারাত্মক। শুধু-যে দেশে তালেবানদের হামলা ডেকে আনা হবে তা নয়, আফগানিস্তান থেকে এদেশের সৈন্যদের লাশের বহর আসতে থাকবে, যাকিনা এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ঘটছে। বাংলাদেশী সৈন্যবাহিনী সরাসরিভাবে মার্কিনের ভাড়াটিয়া বাহিনী হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশ সরাসরিভাবে আফগানিস্তানের জনগণসহ সারা বিশ্বের মুসলিম ও সাধারণ জনগণের শত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। শেখ হাসিনার তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার আজ এই নগ্ন রাজাকারী মূর্তিতেই আবির্ভূত হয়েছে। সকল স্তরের জনগণ-তো বটেই, সকল সেনা সদস্য ও দেশপ্রেমিক অফিসারদের কর্তব্য হবে, এই সর্বনাশা পদপেকে ‘না’ বলা এবং সকল উপায়ে একে প্রতিরোধ করা।

About andolonpotrika

আন্দোলন বুলেটিনটি হলো বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের একটি অনিয়মিত মুখপত্র
This entry was posted in আন্দোলন ৭. Bookmark the permalink.

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s